হৃদয়ের রং লেগেছে !


পাড়ার উর্বশী মেয়েটির দিকে চোখ পড়েছে এক যুবকের। মেয়েটি দেখতে অপূর্ব! প্রতিদিন সেজেগুজে কলেজে যায়। দেখলেই মনে এক অজানা খুশি দোলা দিতে থাকে। বুকটা কেমন যেন করে, বড় ফাঁকা ফাঁকা লাগে। কোনো কাজেই মন বসে না। বড্ড অস্থির হয়ে থাকে মন। অশান্ত হৃদয় একনজর না দেখা পর্যন্ত শান্তই হয় না!

এই পথেই কলেজে যায় সে। উচাটন মন নিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষার পর অপেক্ষা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা।

কখন আসবে?

নাকি আসবেই না। নাকি অন্য কোনো পথ দিয়ে চলে যাবে!

অসুস্থ নাতো আজকে? যদি না আসে! অপেক্ষার যেন শেষ নেই।

বন্ধুরা খেপায়—‘কীরে! হৃদয়ে রং লাগছে মনে হয়? আমাগো কিন্তু ট্রিট দিতে হবে দোস্ত, নাইলে খবর আছে!'

বড় ভাইয়ের সাবধান বাণী— 'ভুলেও যেন ওই পথে না দেখি!' বাবার চোখ রাঙানি—'এসব কী শুনছি! পড়াশোনা বাদ দিয়ে নাকি রাস্তায় ফ্যা ফ্যা করে ঘুরে বেরাস! ঠ্যাং ভেঙে দেবো একদম!' বন্ধুদের খেপানো। বড় ভাইদের চোখ রাঙানো। বাবা-মায়ের শাসানো ইত্যাদি উপেক্ষা করেও সেই মেয়েকে সে ভালোবেসে ফেলল। দীর্ঘ অপেক্ষার পর মনের কথাটা প্রকাশ করবে বলে যখন প্রস্তুতি নিলো, তখন জানতে পারল এক নৃশংস ঘটনা!

মেয়েটা দেখতেই যত সুন্দরী, কিন্তু চরিত্রের ঠিক নেই। নামি নামি কসমেটিক্স আর জামা-জুতার বন্দোবস্তের ধান্দায় বহু ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক রাখে। তাদেরই কারও না কারও সঙ্গে হররোজ সে বেড শেয়ারের মতো জঘন্য কাজটিও করে।

মানুষের ওপরটা দেখে ভেতরটা আপনি কীভাবে বুঝবেন? বোঝার কোনো উপায় নেই। চরিত্রটাই আসল। চরিত্র ভালো তো সব ভালো। দেখতে অসুন্দর, এমন মানুষও চরিত্রগুণে সবার কাছে সমাদৃত হন। চরিত্রের সৌন্দর্যের চেয়ে বড় আর কিছু নেই।

এজন্য আমরা যখন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চেহারা দেখি, তখন চরিত্রের জন্যও কিছু ভাবা দরকার।

আমাদের রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আয়নার সামনে যখন দাঁড়াতেন, এই দোয়া করতেন—'আল্লাহুম্মা হাসসানতা খালকি ফাহাসসিন খুলুকি।' হে আল্লাহ, আমার চেহারা যেমন সুন্দর করেছ, চরিত্রটাকেও তেমনই সুন্দর করে দাও!

বই : কাল থেকে ভালো হয়ে যাব

মন্তব্যসমূহ